শুক্রবারের ট্রেডের বিশ্লেষণ
EUR/USD পেয়ারের 1H চার্ট
শুক্রবার, EUR/USD কারেন্সি পেয়ারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা অব্যাহত ছিল, যা সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রতিবেদনের ফলাফল থেকে উল্লেখযোগ্যভাবে সমর্থন পেয়েছে। পূর্বেই উল্লেখ করা হয়েছে যে, ব্যবসায়িক কার্যক্রম সংক্রান্ত সূচকগুলো সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সূচক নয়। তবে এটি লক্ষ্য করা দরকার যে সামষ্টিক প্রতিবেদনের ইতিবাচক ফলাফল ছাড়াই এই পেয়ারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী কারেকশন শুরু হয়েছিল, যা নির্দেশ করে যে ট্রেডাররা বর্তমানে এই পেয়ারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী মুভমেন্টকে সমর্থন করছে। ব্যবসায়িক কার্যক্রম সূচক, যা ইউরোর দর বৃদ্ধি করতে সহায়ক হয়েছে, শুধুমাত্র সামগ্রিক বাজার পরিস্থিতিকে আরো ইতিবাচক করেছে।
জার্মানিতে প্রকাশিত উভয় ব্যবসায়িক কার্যক্রম সূচক পূর্বাভাস এবং পূর্ববর্তী মান অতিক্রম করেছে। ইউরোজোনে, উৎপাদন খাতের সূচক প্রত্যাশার চেয়ে ইতিবাচক ছিল, যেখানে পরিষেবা খাতের সূচক প্রায় অপরিবর্তিত ছিল। ফলস্বরূপ, চারটি প্রতিবেদনের মধ্যে তিনটির ফলাফলই ইউরোর দর বৃদ্ধিতে অবদান রেখেছে। বিপরীতে, মার্কিন পরিষেবা খাতের ব্যবসায়িক কার্যক্রম সূচক অপ্রত্যাশিতভাবে হ্রাস পেয়েছে, এবং কনজিউমার সেন্টিমেন্ট সূচক পূর্বাভাসের চেয়ে কম ছিল। ফলে, দিনের প্রায় সব প্রতিবেদনই ইউরোর দর বৃদ্ধিকে সমর্থন করেছে। তদ্ব্যতীত, মার্কেটের ট্রেডাররা বর্তমানে ঊর্ধ্বমুখী কারেকশনের দিকে ঝুঁকছে।
EUR/USD পেয়ারের 5M চার্ট
শুক্রবার, 5-মিনিটের টাইমফ্রেমে মাত্র একটি ট্রেডিং সিগন্যাল তৈরি হয়েছিল। ইউরোপীয় ট্রেডিং সেশনে, মূল্য 1.0433 থেকে 1.0451 রেঞ্জ ব্রেক করে 1.0526 লেভেলের দিকে এগিয়েছিল। ফলে, দিনের বেলা ইউরোর মূল্য প্রায় 100 পিপ বেড়েছে। একটি লং পজিশন অত্যন্ত লাভজনক হতে পারত, যদিও মূল্য সঠিকভাবে লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছায়নি।
সোমবারের ট্রেডিংয়ের কৌশল:
ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে, বর্তমানে মধ্যমেয়াদে EUR/USD পেয়ারের মূল্যের নিম্নমুখী প্রবণতা বিরাজ করলেও স্থানীয় পর্যায়ে এই পেয়ারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা বিদ্যমান। পূর্বে উল্লেখ করা হয়েছে, ইউরোর দরপতন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে কারণ মৌলিক এবং সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপট এখনও মার্কিন ডলারের পক্ষে কাজ করছে। তবে, কারেকশন সমাপ্তি হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করা উচিত, যা ট্রেন্ডলাইনের নিচে মূল্যের কনসলিডেশনের মাধ্যমে নিশ্চিত করা যেতে পারে।
সোমবার, শুক্রবারের তুলনায় মার্কেটে অনেক দুর্বল মুভমেন্ট দেখা যেতে পারে। বর্তমান ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতার বিপরীতে একটি কারেকশন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে, কারণ ইউরোর মূল্য দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে, যা ইউরোপীয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক (ECB) এবং ফেডারেল রিজার্ভের বৈঠকের আগে টেকসই বলে মনে হচ্ছে না।
5-মিনিটের টাইমফ্রেমে, নিম্নলিখিত লেভেলগুলো পর্যবেক্ষণ করা উচিত: 1.0156, 1.0221, 1.0269-1.0277, 1.0334-1.0359, 1.0433-1.0451, 1.0526, 1.0596, 1.0678, 1.0726-1.0733, 1.0797-1.0804, এবং 1.0845-1.0851। সোমবারের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট হবে ক্রিস্টিন লাগার্ডের ভাষণ। যেহেতু তিনি গত সপ্তাহে ইতোমধ্যেই দুইবার বক্তব্য দিয়েছেন, তাই তার বক্তব্য থেকে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়ার প্রত্যাশা নেই। বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিতব্য ইসিবির বৈঠকের পর গুরুত্বপূর্ণ বিবৃতি পাওয়া যাবে বলে আশা করা হচ্ছে।
ট্রেডিং সিস্টেমের মূল নিয়মাবলী:
1) সিগন্যালের শক্তি: সিগন্যাল গঠন করতে কতক্ষণ সময় নেয় তার উপর ভিত্তি করে সিগন্যালের শক্তি নির্ধারণ করা হয় (বাউন্স বা লেভেলের ব্রেকথ্রু)। এটি গঠন করতে যত কম সময় লাগবে, সিগন্যাল তত শক্তিশালী হবে।
2) ভুল সিগন্যাল: যদি ভুল সিগন্যালের উপর ভিত্তি করে নির্দিষ্ট লেভেলের কাছাকাছি দুটি বা ততোধিক পজিশন খোলা হয় (যা টেক প্রফিট শুরু করেনি বা নিকটতম লক্ষ্যমাত্রায় পৌছায়নি), তাহলে এই লেভেলে প্রাপ্ত পরবর্তী সমস্ত সিগন্যাল উপেক্ষা করা উচিত।
3) ফ্ল্যাট মার্কেট: ফ্ল্যাট মার্কেটের সময়, যেকোন পেয়ারের একাধিক ফলস সিগন্যাল তৈরি হতে পারে বা কোন সিগন্যালের গঠন নাও হতে পারে। যাই হোক না কেন, ফ্ল্যাট মুভমেন্টের ইঙ্গিত পাওয়া মাত্র ট্রেডিং বন্ধ করে দেয়া উচিত।
4) ট্রেডিং টাইমফ্রেম: ইউরোপীয় সেশনের শুরু এবং মার্কিন সেশনের মাঝামাঝি সময়ে ট্রেড ওপেন করা উচিত। এর বাইরে সমস্ত ট্রেড ম্যানুয়ালি ক্লোজ করতে হবে।
5) MACD সূচকের সিগন্যাল: প্রতি ঘন্টার চার্টে, শুধুমাত্র উল্লেখযোগ্য ভোলাট্যালিটি এবং প্রতিষ্ঠিত প্রবণতার মধ্যেই MACD থেকে প্রাপ্ত সিগন্যালের উপর ভিত্তি করে ট্রেড করার পরামর্শ দেওয়া হয়, যা একটি ট্রেন্ডলাইন বা ট্রেন্ড চ্যানেল দ্বারা নিশ্চিত করা হয়।
6) কাছাকাছি লেভেল: যদি দুটি লেভেল একে অপরের খুব কাছাকাছি অবস্থিত হয় (5 থেকে 15 পিপস পর্যন্ত), সেগুলোকে সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেল হিসাবে বিবেচনা করা উচিত।
7) স্টপ লস: মূল্য 15 পিপস উদ্দেশ্যমূলক দিকে যাওয়ার পর, ব্রেক-ইভেনে স্টপ লস সেট করা উচিত।
চার্টে কী কী আছে:
সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেলগুলো হল সেই লেভেল যা কারেন্সি পেয়ার কেনা বা বিক্রি করার সময় লক্ষ্যমাত্রা হিসাবে কাজ করে। আপনি এই লেভেলগুলোর কাছাকাছি টেক প্রফিট সেট করতে পারেন।
লাল লাইন হল চ্যানেল বা ট্রেন্ড লাইন যা বর্তমান প্রবণতা প্রদর্শন করে এবং দেখায় যে এখন কোন দিকে ট্রেড করা ভাল হবে।
MACD (14,22,3) সূচক, হিস্টোগ্রাম এবং সিগন্যাল লাইন উভয়ই অন্তর্ভুক্ত করে, এটি একটি সহায়ক টুল হিসেবে কাজ করে এবং এটি সিগন্যালের উৎস হিসেবেও ব্যবহার করা যেতে পারে।
গুরুত্বপূর্ণ বক্তৃতা এবং প্রতিবেদন (সর্বদা নিউজ ক্যালেন্ডারে অন্তর্ভুক্ত থাকে) যেকোন কারেন্সি পেয়ারের মূল্যের গতিশীলতাকে ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করতে পারে। অতএব, এগুলো প্রকাশের সময় অত্যন্ত সতর্কভাবে ট্রেডিং করতে হবে। প্রচলিত প্রবণতার বিপরীতে আকস্মিকভাবে মূল্যের পরিবর্তন থেকে সুরক্ষিত থাকতে মার্কেটে থেকে বের হয়ে যাওয়াই যুক্তিসঙ্গত হতে পারে।
নতুন ট্রেডারদের সর্বদা মনে রাখতে হবে যে প্রতিটি ট্রেড থেকে লাভ হবে না। একটি সুস্পষ্ট কৌশল গ্রহণ ও কার্যকর অর্থ ব্যবস্থাপনাই দীর্ঘমেয়াদে ট্রেডিংয়ের সাফল্যের ভিত্তি হিসেবে কাজ করে।